• রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||

যানজটে জান পেরেশান 

প্রকাশ:  ০৬ এপ্রিল ২০২২, ১৫:২০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানী ঢাকা যেন থমকে গেছে। ঢাকায় আজ যেন ঘুরছে না গাড়ির চাকা। থমকে আছে সব গাড়ি। গন্তব্যে পৌঁছাতে বিরক্তিকর জ্যামে বসে আছে হাজারো মানুষ। অপেক্ষার পালা যেন শেষ হচ্ছেই না। ১০ থেকে ১৫ মিনিট না টানা ৪০ মিনিট আবার কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা থেমে আছে গাড়ি।

বুধবার (৬ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা, কাকরাইল, শান্তিনগর, গুলিস্থান, পল্টন, প্রেস ক্লাব সব জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে শত শত গাড়ি। রমজান মাস হওয়ায় ভোগান্তি চরমে।

কুড়িল থেকে গুলিস্তান যাওয়ার জন্য ১ বছর বয়সী ছেলে আবির হাসনাতকে নিয়ে ভিক্টর ক্লাসিক বাসে উঠে রোজীনা হাসনাত। রাস্তা ফাঁকা থাকলে ১ ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু ২ ঘণ্টা হয়ে গেলেও ২ কিলোমিটার রাস্তা পার হতে পারেননি তিনি।

এদিকে, রাস্তার জ্যাম ও বাসের যাত্রীদের ভিড়ে বাসের ভেতর বসে থাকাও কষ্টকর। ছোট ছেলেটি ইতোমধ্যে হাঁসফাঁস শুরু করেছে। অবুঝ ছেলেকে সান্ত্বনা দিতে দিতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে মা। অন্য কোনো উপায় না পেয়ে নীরবে সহ্য করছে অসহনীয় কষ্ট। কিন্তু ছেলে কেঁদেই যাচ্ছে। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই রোজীনার।

দীর্ঘ সময় বাসে বসে থাকতে থাকতে রোজীনার মতো অনেকে প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়েছে। মাথার উপর তীব্র রোদ, রাস্তায় তীব্র জ্যাম, গাড়ির ভেতর দাঁড়ানোর ঠাঁই নেই আবার রোজা। সবকিছু মিলে নাভিশ্বাস উঠে গেছে নাগরিকদের।

মতিঝিল জোন ট্রাফিক পুলিশের উপ-কমিশনার বজলু মিয়া জানান, একদিকে স্কুল খোলা। তারপর আবার রমজান মাস। সকলেই একটু বেলা করে বের হয়। ঢাকার সবদিক থেকে রাস্তায় গাড়ি ভরা। একটা রাস্তা ফাঁকা থাকলে আমরা জ্যাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। কিন্তু সকল পাশ দিয়ে গাড়ি আসছে।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই রাস্তায় নিয়ম মানে না। সবাই আগে যেতে চায়। অথচ সকলেই যদি ট্রাফিকের আদেশ মেনে চলে তাহলে জ্যাম অনেকটা কম হবে। কিন্তু ফাঁক দেখলে অনেকেই গাড়ি ঢুকায় দেয়। আর সেই এক গাড়ির জন্য তিন চারটা রাস্তার ট্রাফিক এলোমেলো হয়ে যায়। তাই আমরা চাইলেও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। যার ফলে কিছু কিছু রাস্তায় দীর্ঘ জ্যাম লেগেই থাকছে।

তারপরেও আবার যত্রতত্র যাত্রী উঠানামাও জ্যামের একটি মূল কারণ বলে জানান তিনি। রাজধানীর সব রাস্তায় যাত্রী উঠানো নামানোর জন্য জায়গা থাকলেও অনেকেই সেই নিয়ম মানে না ফলে যানজট আরও বেশি হয়।

ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরে চেষ্টারও ত্রুটি নেই বলে জানিয়েছেন ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা। নিজেরা ইফতার সেহরি ঠিকমতো না করে ঢাকাবাসিকে স্বস্তি দিতে কাজ করছেন পুলিশ সদস্যরা।

রমজানে যানজট নিয়ে খোলামেলা আলোচনায় ডিএমপির তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (এডিসি) এসএম শামীম বলেন, রমজানে যানজট বেড়েছ এটা মানতে নারাজ। গত দুই বছর করোনা প্যান্ডামিকের কারণে যে বিধিনিষেধ ছিল তা শিথিল হয়েছে, সব খুলেছে। স্কুল কলেজ বিশ্ব বিদ্যালয়, অফিস আদালত খুলেছে। যে গাড়িগুলো এর আগে বাসা বা অফিসে ছিল সব এখন বাহিরে বেড়িয়েছে। দেশে গত ২ বছরে ৩ লাখ ৬৫ হাজার গাড়ি বেড়েছে। যা গত দুই বছর রাস্তায় দেখিনি। প্রতিদিন সাড়ে চারশ বেশি গাড়ি দেশের মানুষ কিনেছে করোনা মধ্যে। এই গাড়িগুলোও রাস্তায় নেমেছে। ফলে গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে, ডিপিডিসির কাজ, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং মেট্টোরেলের কাজের জন্য রাস্তার ৩০-৪০ শতাংশ জায়গা কমেছে। জনসংখ্যাও বেড়েছে।

পূর্ব পশ্চিম/জেআর

যানজট
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close